![]() |
মহাস্থানগড়- বগুড়া, রাজশাহী |
মহাস্থানগড়- বগুড়া, রাজশাহী
মহাস্থানগড়ের অবস্থান করতোয়া নদীর পশ্চিম তীরে বগুড়া জেলা শহরের ১৩ কিঃমিঃ উত্তরে। মহাস্থানগড় প্রায় আড়াই হাজার বছরের প্রাচীন প্রাচীর পুন্ড্রবর্ধনভূক্তির রাজধানী পুন্ড্রনগর। পূর্ব পশ্চিমে ১৩৭০ মিঃ প্রশস্থ এবং উত্তর দক্ষিণে ১৫২৫ মিঃ দীর্ঘ ও সমতল ভূমি হতে ৫ মিঃ উচু চতুর পাশে এই মহাস্থানগড়। সর্বপ্রাচীন ও সর্বপ্রধান এ দূর্গনগরী পর্যায় ক্রমে মাটি ও ইটের বেষ্টনী দ্বারা সুরক্ষিত। রয়েছে পূর্ব দিকে নদী ও অপর তিন দিকে গভীর পরিখানগরীর অতিরিক্ত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা হিসাবে ব্যবহৃত বেস্টনী প্রাচীর ছাড়াও। মহাস্থানগড় ছিল পরাক্রমশালী মৌর্য, গুপ্ত ও পাল শাসকবর্গের প্রাদেশিক রাজধানী এবং হিন্দু সমান্তরাজাগণের রাজধানী ছিল পরবর্তীকালে। এ স্থানে সর্বপ্রথম প্রত্নতাত্তিক উৎখনন কার্য শুরু করা হয় ১৯২৮ থেকে ১৯২৯ সালে। এ সময় তিনটি স্থানে খনন হয় গোবিন্দ ভিটা, মুনির ঘোন ও বইরাগির ভিটা। নিয়মিতভাবে দূর্গের বিভিন্ন অংশ উৎখনন করা হয় ১৯৮৮ সালে এবং এর পূর্বে দীর্ঘ দিন পর ১৯৬০ থেকে ১৯৬১ সালে উৎখনন করা হয়। এখানকার প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণার লক্ষ্যে ফ্রান্স সরকার ও বাংলাদেশ যৌথভাবে মহাস্থানগড় খনন শুরু করে ১৯৯৩ সাল হতে। প্রথম পর্যায়ে প্রাচীরের মধ্যবর্তী এলাকা খনন করা হয় ১৯৯৯ সালে এবং মাজারের পশ্চিম পাশে খনন কাজ হয় ২০০০ সাল হতে দ্বিতীয় পর্যায়ে।
নিরবিচ্ছিন্নভাবে বসতি নিদর্শন উম্মোচিত হয়েছে দুর্গ নগরীর অভ্যন্তরে খৃস্টাব্দ চতুর্থ শতক থেকে শুরু করে মুসলিম যুগ পর্যন্ত দীর্ঘ সময় ব্যাপি ব্যাপক অনুসন্ধান ও খননের ফলে। উম্মোচিত হয়েছে ১৮ টি স্তরে মসজিদ, মন্দির, তোরণ, বুরুজ, নালা কুপ, নর্দমা, রাস্তা, মুসলিম যুগের কাচাঁ পাকা ঘর বাড়ী, পাল, গুপ্ত, প্রাক মৌর্য ইত্যাদি। আরবি উৎকীর্ণ লিপিযুক্ত একটি প্রস্তুর ফলক, প্রচুর সাধারণ মৃৎপাত্র, জালের কাঠি এবং মাটির ওধাবত দ্রব্যাদি, প্রস্তুর ও পোড়ামাটির মূর্তি স্বল্প মূল্যবান প্রস্তুর গুটিকা গোলক, মৌর্য যুগের টাপিযুক্ত শিলা খন্ড, শুংগ বৈশিষ্ট্য মন্ডি পোড়ামাটির ফলক, কালো মসৃণমৃৎপাত্র উত্তরাঞ্চলীয়, বুলেটড ওয়ার, ব্লাক এন্ড বেচ চেয়ার, ছাপাঙ্কিত রৌপ্য মুদ্রা ও ছাঁচে ঢালাতাম্র মুদ্রা উল্লেখযোগ্য তদানীন্তন নগরজীবনের বিভিন্ন অস্থাবর সাংস্কৃতিক দ্রব্রাদি।
মহাস্থানগড়ের দর্শনীয় স্থান
* হযরত শাহ সুলতান মাহমুদ বলখী (র:) এর মাজার শরীফ।
* খোদার পাথর ভিটা
* জাদুঘর
* বৈরাগীর ভিটা
* মানকালীর ঢিবি
* গোকুল মেধ
* মঙ্গলকোট স্তুপ
* স্কন্ধের ধাপ
* কালীদহ সাগর
* ভিমের জঙ্গল
* ভাসু বিহার
* বিহার ধাপ
* ট্যাংরা বৌদ্ধ স্তুপ
* গোবিন্দ ভিটা
* জিয়ৎ কুন্ড
* শীলাদেবীর ঘাট
* পরশুরামের প্রাসাদ
যেভাবে যাবেন মহাস্থানগড়
প্রথমে বগুড়ায় যেতে হবে মহাস্থানগড় যেতে হলে। প্রায় ২১৪ কিঃমিঃ ঢাকা থেকে বগুড়ার দূরত্ব। এবং ৯ কিঃ মিঃ বগুড়া থেকে মহাস্থানগড়। সিএনজি অটোরিকশা বা বাসে করে যাওয়া যায় বগুড়া থেকে মহাস্থানগড়। বগুড়ার হাড্ডি পট্রি ও বগুড়ার চারমাথা থেকে বাস পাওয়া যায়।
0 মন্তব্যসমূহ
please do not enter any spam link in the comment box .
Emoji