কালজয়ী ও খ্যাতিমান অভিনেতা হুমায়ূন ফরীদি

কালজয়ী ও খ্যাতিমান অভিনেতা হুমায়ূন ফরীদি

 

কালজয়ী ও খ্যাতিমান অভিনেতা হুমায়ূন ফরীদি

নাম:- হুমায়ূন ফরীদি

জন্ম স্থান:- নারিন্দা, ঢাকা, বাংলাদেশ

জন্ম:- ২৯ মে ১৯৫২

পিতা:- এ টি এম নূরুল ইসলাম

মাতা:- বেগম ফরিদা ইসলাম

শিক্ষা:- অর্থনীতি

কর্মজীবন:- ১৯৮১ থেকে ২০১২

পেশা:- অভিনেতা

মাতৃশিক্ষায়তন:- জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

নাগরিকত্ব:- বাংলাদেশ

দাম্পত্য সাথী:- মিনু প্রথম স্ত্রী ( বিয়ে ১৯৮০ এবং বিচ্ছেদ ১৯৮৪ সালে ) সুবর্ণা মুস্তাফা দ্বিতীয় স্ত্রী ( বিয়ে ১৯৮৪ এবং বিচ্ছেদ ২০০৮ সালে )

সন্তান:- শারারাত ইসলাম দেবযানী ( মেয়ে )

পুরস্কার:- জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার

জাতীয়তা:- বাংলাদেশী

মৃত্যু:- ১৩ ফেবরুয়ারি ২০১২ 


হুমায়ূন ফরীদির প্রথম জীবন

ঢাকার নারিন্দায় হুমায়ূন ফরীদি জন্ম গ্রহণ করেন ১৯৫২ সালের ২৯ মে। হুমায়ূন ফরীদির পিতা এ টি এম নূরুল ইসলাম ও মাতা বেগম ফরিদা ইসলাম। হুমায়ূন ফরীদিরা চার ভাই-বোন এর মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। তিনি মাদারীপুরের ইউনাইটেড ইসলামিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন ১৯৬৫ সালে। তিনি নাট্য জগতে প্রবেশ করেন মাদারীপুর থেকেই। বাশার মাহমুদ ছিলেন হুমায়ূন ফরীদির নাট্যঙ্গানের গুরু। সর্বপ্রথম তিনি দর্শকদের সামনে আত্মপ্রকাশ করেন কল্যাণ মিত্রের 'ত্রিরত্ন' নাটকে রত্ন চরিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে। এরপর তিনি ৬টি মঞ্চ নাটকে অংশ নেন এর মধ্যে অবিচার, দায়ী কে, সমাপ্তি, টাকা আনা পাই ইত্যাদি অন্যতম মঞ্চ নাটক। মাধ্যমিক স্তর উত্তীর্ণের পর চাঁদপুর সরকারি কলেজে পড়াশোনা করেন বাবার চাকুরীর সুবাদে। হুমায়ূন ফরীদি এর পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জৈব-রসায়ন বিভাগে ভর্তি হন উচ্চ মাধ্যমিক শেষ হওয়ার পরে। তার পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায় ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে এবং তিনি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন । অর্থনীতি বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী লাভ করেন যুদ্ধের পর ফিরে এসে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। 


হুমায়ূন ফরীদির কর্মজীবন

হুমায়ূন ফরীদি ঢাকা থিয়েটারের সদস্যপদ লাভ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবস্থায়। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত নাট্য উৎসবে তিনি অন্যতম সংগঠক ছিলেন ১৯৭৬ সালে। হুমায়ূন ফরীদি নাট্যঙ্গানে পরিচিত মুখ হয়ে উঠেন এ নাট্য উৎসবের মাধ্যমে। হুমায়ূন ফরীদি শেখ নিয়ামত আলীর দখন চলচ্চিত্র দিয়ে ১৯৮৫ সালে পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে। এ আগে তিনি তানভীর মোকাম্মেলের স্বল্পদৈর্ঘ্য হুলিয়া নামক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন ১৯৮৪ সালে। তার অভিনীত চলচ্চিত্র গুলি হল- আনন্দ অশ্রু, শাসন, দুর্জয়, আজকের হিটলার, বিশ্ব প্রেমিক, বীর পুরুষ, দিনমজুর, লড়াকু, দহন, সন্ত্রাস, মিথ্যার মৃত্যু, ম্যাডাম ফুলি, অধিকার চাই, টাকার অহংকার, ঘাতক, ভন্ড, প্রবেশ নিষেধ, কখনো মেঘ কখনো বৃষ্টি, ভালোবাসি তোমাকে, প্রাণের চেয়ে প্রিয়- বিল্লাত আলী, একাত্তরের যীশু- মুক্তিযোদ্ধা, আসামী বধু, মায়ের অধিকার, বাংলার বধূ, মেহেরজান, কি যাদু করিলা, আহা!, চেহারা, দূরত্ব, শ্যামল ছায়া, জয়যাত্রা, ব্যাচেলর, টাকা, মাতৃত্ব, বিদ্রোহী চারিদিকে, মনে পড়ে তোমাকে, এবং কালজয়ী ও খ্যাতিমান অভিনেতা হুমায়ূন ফরীদির শেষ চলচ্চিত্র ছিল " এক জবানের জমিদার হেরে গেলেন এইবার- জমিদার। তিনি দহন চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য বাচসাস পুরস্কার অর্জন করেন শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে। তিনি বেশ কয়েকটি টিভি নাটকে অভিনয় করেন সে গুলি হল- কোথাও কেউ নেই, ভাঙ্গনের শব্দ শুনি, দূরবীন দিয়ে দেখুন, নীল নকশাল সন্ধানে, মোহনা, কাছের মানুষ, সমূদ্রে গাংচিল, সংশপ্তক, পাথর সময়, হঠাৎ একদিন, নিখোঁজ সংবাদ, মানিক চোর নকুলপুর কত দূর, অক্টোপাস, সেই চোখ, গুপ্তধন, প্রতিধ্বনি, আবহাওয়ার পূর্বাভাস, জহুরা, শৃঙ্খল, ভবের হাট, সেতু কাহিনী, সাত আসমানের সিঁড়ি, এবং ৬০ তম পর্ব হতে 'আমাদের নুরুল হুদা নাটকে অভিনয় করেন । হুমায়ূন ফরীদি বিখ্যাত হয়ে ছিলেন সংশপ্তক নাটকে কানকাটা রমজান চরিত্রে অভিনয়ের জন্যে। তিনি কিছু মঞ্চ নাটকেও অভিনয় করেছিলেন। তিনি শিল্পকলায় একুশে পদক মরণোত্তর লাভ করেন ২০১৮ সালে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠানের ৪০ বছর পূর্তি উপলক্ষে তাকে সম্মাননা প্রদান করেন নাট্যাঙ্গানে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরুপ। তিনি সবাই কে কাদিঁয়ে ১৩ ফ্রেবরুয়ারি ২০১২ সালে চলে গেছেন না ফেরার দেশে। তিনি প্রায় ৬০ বছর বেচেঁ ছিলেন । তার অসাধারণ অভিনয়ের জন্য তিনি সবার অন্তরে চিরকাল স্বরণী হয়ে থাকবেন।

Reactions

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ