বচন কাকে বলে। কত প্রকার ও কি কি ? উদাহরণসহ |
বচন:- বচন ব্যাকরণের একটি পারিভাষিক শব্দ। 'বচন' অর্থ সংখ্যার ধারণা। ব্যাকরণে বিশেষ্য বা সর্বনামের সংখ্যাগত ধারণা প্রকাশের উপায়কে বচন বলে। যেমন-
আমি ভাত খাই - এখানে একজন মানুষের ভাত খাওয়া বোঝাচ্ছে।
আমরা ভাত খাই - এখানে একজনের বেশি অর্থাৎ একাধিক মানুষের ভাত খাওয়া বোঝাচ্ছে।
বচন দুই প্রকার। যথা -
১. একবচন
২. বহুবচন
একবচন:- যে শব্দ দ্বারা কোনো প্রাণী, বস্তু বা ব্যক্তির একটি মাত্র সংখ্যার ধারণা হয়, তাকে একবচন বলে। যেমন -
মেয়েটি সুন্দর।
এখানে 'মেয়েটি' বলতে একটি মেয়েকে বোঝাচ্ছে, তাই এটি একবচন।
বহুবচন:- যে শব্দ দ্বারা কোনো প্রাণী, বস্তু বা ব্যক্তির একের অধিক অর্থাৎ বহু সংখ্যার ধারণা হয়, তাকে বহুবচন বলে। যেমন -
মেয়েরা আসছে।
এখানে 'মেয়েরা' বলতে একজনের বেশি অর্থাৎ অনেক মেয়েকে বোঝাচ্ছে, তাই এটি বহুবচন।
কেবল বিশেষ্য ও সর্বনাম শব্দের বচনভেদ হয়।
একবচন থেকে বহুবচন করার নিয়ম:
১. সাধারণত একজনের সাথে রা, এরা, গুলা, গুলি, গুলো, দের, দিগ প্রভৃতি বিভক্তি এবং সব, সকল, সমুদয়, কুল, বৃন্দ, বর্গ, রাজি, মালা, রাশি, পাল ইত্যাদি সমষ্টিবোধক শব্দ যোগ করে বহুবচন করা হয়।
যেমন -
রা:- কেবল উন্নত প্রাণিবাচক শব্দের সাথে 'রা' বিভক্তি ব্যবহৃত হয়। যেমন - ধনীরা, ছাত্ররা।
গুলা, গুলি, গুলো :- ইতর প্রাণী ও অপ্রাণীবাচক শব্দের সাথে গুলা, গুলি, গুলো ব্যবহৃত হয়।
যেমন - আমগুলো, টাকাগুলো।
গণ, বৃন্দ, মন্ডলী, বর্গ :- এগুলো উন্নত প্রাণীবাচক মনুষ্য শব্দের বহু বচনে ব্যবহৃত হয়। যেমন-
জনগন, ভক্তবৃন্দ, শিক্ষকমন্ডলী, মন্ত্রীবর্গ।
কুল, সকল, সব, সমূহ :- প্রাণীবাচক ও অপ্রণীবাচক শব্দের বহু বচনে ব্যবহৃত হয়। যেমন -
মাতৃকুল, মনুষ্যসকল, পাখিসব, বৃক্ষসমূহ।
আবলি, রাজি, রাশি, মালা, গুচ্ছ, দাম, নিকর, পুঞ্জ :- এগুলো কেবল অপ্রাণীবাচক শব্দের বহুবচনে ব্যবহৃত হয়। যেমন -
পুস্তাকাবলি, কবিতাগুচ্ছ, মেঘপুঞ্জ, তারকারাজী, কুসুমদাম, কমলনিকর।
২. বিশেষ্যের সাথে বিশেষ্য অথবা বিশেষণের সাথে বিশেষণ যুক্ত হয়েও বিশেষ্য ও বিশেষণ পদের দ্বিত্ব প্রয়োগে বহুবচন গঠিত হয়। যেমন -
বিশেষ্য ও বিশেষণ - হাঁড়ি হাঁড়ি সন্দেশ।
বিশেষণ ও বিশেষণ - লাল লাল ফুল।
৩. বিদেশী মূল ভাষার অনুসরণেও বহুবচন হয়ে থাকে। যেমন -বুজুর্গান, সাহেবান।
0 মন্তব্যসমূহ
please do not enter any spam link in the comment box .
Emoji